জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং প্রযুক্তিগতভাবে অন্যতম উন্নত একটি জাতি। কম খরচে নিরাপদ উপায়ে বিদেশ যেতে চাইলে সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার উপায় ২০২৫ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। কারণ সরকারি প্রক্রিয়া নির্ভরযোগ্য, খরচ কম এবং দালাল প্রতারণার ঝুঁকি নেই।
সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার উপায় (ওয়ার্ক পারমিট ভিসা)
স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক ভিসা যেটাই হোক, জাপানে সরকারিভাবে যেতে চাইলে প্রথমেই জানতে হবে BMET (বিএমইটি)–এর অধীনে কীভাবে আবেদন করতে হয়। বাংলাদেশ সরকার BMET-এর মাধ্যমে জাপানে কর্মী পাঠায় এবং পুরো প্রসেসটি স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হয়।
[Ministry of Foreign Affairs of Japan]
[জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো]
সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার ধাপগুলো:
- BMET ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করুন
নিয়মিত সার্কুলার দেখতে হবে এবং পোর্টালে গিয়ে নিজের নামে একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। - চাকরির জন্য অনলাইনে আবেদন করুন
সার্কুলার প্রকাশ হলে নির্দিষ্ট পদের জন্য আবেদন করতে হবে। - পরীক্ষা ও যোগ্যতা যাচাই
BMET কর্তৃপক্ষ লিখিত, মৌখিক বা দক্ষতা পরীক্ষা নিয়ে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে। - প্রশিক্ষণ গ্রহণ
নির্বাচিত প্রার্থীদের BMET সরকারি প্রশিক্ষণ সেন্টারে প্রয়োজনীয় স্কিল ট্রেনিং দেওয়া হয় (ফি খুবই কম)। - ভিসা প্রসেসিং
প্রশিক্ষণ শেষে প্রয়োজনীয় নথি যাচাই করে সরকারিভাবেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেস করা হয়। - ফ্লাইট ও ডিপ্লয়মেন্ট
সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে প্রার্থীকে জাপানের বিভিন্ন কোম্পানিতে পাঠানো হয়।
এভাবে সম্পূর্ণ সরকারি পদ্ধতিতে কম খরচে জাপানে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।
স্টুডেন্ট ভিসায় জাপান যাওয়ার উপায় (২০২৫ আপডেটেড)
জাপানে পড়াশোনা করতে চাইলে স্টুডেন্ট ভিসা সবচেয়ে সহজ পথ। শিক্ষার্থীরা চাইলে নিজেরাই ভিসা প্রসেস করতে পারে, আবার চাইলে এজেন্সির সহায়তায়ও আবেদন করা যায়।
স্টুডেন্ট ভিসার প্রধান ধাপগুলো:
- জাপানের কোনো কলেজ/ইউনিভার্সিটিতে অ্যাপ্লিকেশন করা
- অফার লেটার সংগ্রহ
- ব্যাংক সাপোর্ট ও ফান্ড প্রুফ
- COE (Certificate of Eligibility) সংগ্রহ
- ভিসার জন্য আবেদন
- সফল হলে জাপানে যাত্রা
এজেন্সি ব্যবহার করলে অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ দিতে হয়, তবে তারা পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করে দেয়।
জাপানে যেতে কি কি লাগে? (ডকুমেন্ট লিস্ট)
ওয়ার্ক ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- বৈধ পাসপোর্ট
- ভোটার আইডি কার্ড
- জাপানি ভাষায় দক্ষতার সার্টিফিকেট
- জীবনবৃত্তান্ত (CV)
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- ন্যূনতম উচ্চতা (পুরুষদের) : ৫ ফুট ২ ইঞ্চি
- এসএসসি পাস সার্টিফিকেট
- স্কিল সার্টিফিকেট (যদি প্রয়োজন হয়)
স্টুডেন্ট ভিসার জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র
- ভর্তি নিশ্চিতকরণ লেটার
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- শিক্ষাগত সব সার্টিফিকেট
- সুপারিশ পত্র (Recommendation Letter)
জাপান যেতে শিক্ষাগত যোগ্যতা (ভিসা অনুযায়ী)
স্টুডেন্ট ভিসা
- ন্যূনতম বয়স: ১৮+
- স্নাতক ভর্তি: কমপক্ষে HSC পাস
- মাস্টার্স/পিএইচডি: স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ফলাফল ভালো হতে হবে
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি পাস
- কোম্পানির প্রয়োজন অনুযায়ী টেকনিক্যাল দক্ষতা লাগতে পারে
টুরিস্ট ভিসা
- ন্যূনতম এসএসসি পাস
- স্থায়ী আয় ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট থাকা আবশ্যক
কেন সরকারিভাবে জাপান যাওয়া নিরাপদ?
- খরচ খুব কম
- দালাল প্রতারণার ঝুঁকি নেই
- সরকারি প্রশিক্ষণে স্কিল উন্নয়ন হয়
- ভিসা রিজেকশনের সম্ভাবনা কম
- ডকুমেন্ট ও প্রসেস সব স্বচ্ছ
শেষ কথা
বাংলাদেশ থেকে কম খরচে বৈধ উপায়ে জাপানে যেতে চাইলে সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার উপায় ২০২৫ জানা সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। BMET-এর অধীনে আবেদন করলে নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও স্বল্প খরচে জাপানে কাজ বা পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া যায়।



