দক্ষিণ কোরিয়া পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ। প্রযুক্তি, শিল্প ও কৃষিতে সমৃদ্ধ এই দেশটিতে কাজের বেতন তুলনামূলকভাবে বেশি, যা বিদেশি শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলে। অনেক বাংলাদেশি তরুণ শিক্ষার্থী ও শ্রমিক ওয়ার্ক ভিসা কিংবা স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। তাই সবার আগে জানা জরুরি—দক্ষিণ কোরিয়া বেতন কত ২০২৫ সালে।
কেন দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের চাহিদা বেশি?
- বিশ্বের অন্যতম শিল্পোন্নত দেশ।
- বেকারত্বের হার কম হওয়ায় কর্মসংস্থান বেশি।
- নিরাপদ ও উন্নত জীবনযাত্রার সুযোগ।
- কৃষি, নির্মাণ ও উৎপাদন খাতে বিদেশি শ্রমিকদের চাহিদা প্রচুর।
এ কারণে দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি স্বপ্নের গন্তব্য বলা যায়।
দক্ষিণ কোরিয়া কাজের বেতন কত ২০২৫ সালে?
দক্ষিণ কোরিয়ার বেতন সাধারণত নির্ভর করে কাজের ধরণ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ওপর। কোম্পানির ধরন ও লোকেশনের ভিত্তিতেও বেতনের পার্থক্য দেখা যায়।
- বর্তমানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য গড় বেতন প্রায় ১.৫ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত।
- দক্ষতা নির্ভর কাজগুলোতে বেতন তুলনামূলক বেশি।
- ইউরোপের উন্নত দেশগুলোর মতো এখানেও বেতন গড়ের চেয়ে উঁচু।
এ কারণে প্রবাসীরা কৃষি, ফ্যাক্টরি, নির্মাণ কিংবা সার্ভিস সেক্টরে কাজ করে ভালো আয় করতে পারেন।
দক্ষিণ কোরিয়া সর্বনিম্ন বেতন কত?
দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রম আইন অনুযায়ী সরকারের নির্ধারিত সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো প্রতি বছর হালনাগাদ করা হয়।
- ২০২৫ সালে প্রতি ঘন্টা সর্বনিম্ন বেতন প্রায় ৭.৫ মার্কিন ডলার।
- ওভারটাইমে সাধারণত স্বাভাবিক মজুরির ১.৫ গুণ প্রদান করা হয়।
- সাপ্তাহিক কাজের সময়সীমা ৪০ ঘণ্টা, তবে অনেক প্রবাসী সপ্তাহে ৫০–৬০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করেন।
এখানে আইনি সুরক্ষা শক্তিশালী হওয়ায় শ্রমিকরা সঠিকভাবে বেতন পান এবং কাজের পরিবেশও নিরাপদ থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়া কৃষি কাজের বেতন ২০২৫
দক্ষিণ কোরিয়ার কৃষি খাত প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি বড় কর্মসংস্থানের জায়গা। বিশেষ করে বাংলাদেশ, নেপাল, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন থেকে আসা শ্রমিকরা এখানে বেশি কাজ করেন।
- মাসিক বেতন গড়ে ১,২০০ থেকে ১,৮০০ মার্কিন ডলার।
- বিনামূল্যে বা স্বল্প ভাড়ায় বাসস্থান দেওয়া হয়।
- অনেক ক্ষেত্রে খাবার ও অন্যান্য ভাতাও যুক্ত থাকে।
এই কারণে কৃষি কাজকে অনেকেই তুলনামূলক সহজ ও লাভজনক মনে করেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি?
দক্ষিণ কোরিয়া একটি প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি। তবে শ্রমনির্ভর কাজেও বিদেশি কর্মীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
কোরিয়ার শ্রম আইন অফিসিয়াল সাইট : [고용노동부]
২০২৫ সালে সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন কাজগুলো হলো:
- কৃষি শ্রমিক
- নির্মাণ শ্রমিক
- ফ্যাক্টরি কর্মী
- হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্মী
- ডেলিভারি ম্যান
- পরিচ্ছন্নতা কর্মী
- সেবা খাতের অন্যান্য কাজ
এই খাতে দক্ষতা কম হলেও কাজের সুযোগ বেশি এবং বেতনও ভালো।
কেন দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করা লাভজনক?
- উন্নত অর্থনীতিতে স্থিতিশীল আয়।
- শ্রম আইন অনুসারে সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত।
- অতিরিক্ত সময় কাজ করে বাড়তি আয় করার সুযোগ।
- প্রবাসী সম্প্রদায়ের কারণে সামাজিক সহায়তা পাওয়া সহজ।
দক্ষিণ কোরিয়া বেতন নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- দক্ষতা যত বেশি, বেতনও তত বেশি।
- স্থানীয় ভাষা (কোরিয়ান) শিখলে কাজের সুযোগ বহুগুণ বাড়ে।
- শহরভেদে বেতন ভিন্ন—সিউল ও বুসানে তুলনামূলকভাবে বেশি।
- দীর্ঘমেয়াদে কাজ করলে স্থায়ী হওয়ার সুযোগও থাকে।
শেষ কথা
২০২৫ সালের হিসেব অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া বিদেশি কর্মীদের জন্য অন্যতম সেরা গন্তব্য। কৃষি থেকে শুরু করে ফ্যাক্টরি বা সার্ভিস সেক্টর—সব ক্ষেত্রেই ভালো বেতনের সুযোগ রয়েছে। তাই যারা বিদেশে কাজের পরিকল্পনা করছেন, তাদের অবশ্যই দক্ষিণ কোরিয়া বেতন কত এবং কাজের ধরন অনুযায়ী সুযোগগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা জরুরি।